শুধু ওজন নয় ,বন্ধ্যাত্বেরও ঝুঁকি বাড়াতে পারে অতিরিক্ত খাওয়া ও জাঙ্ক ফুডের অভ্যাস

শুধু ওজন নয় ,বন্ধ্যাত্বেরও ঝুঁকি বাড়াতে পারে অতিরিক্ত খাওয়া ও জাঙ্ক ফুডের অভ্যাস

reasons of infertility and pcos
Infertility-বর্তমান সময়ের খাদ্যাভ্যাসে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগজনক একটি প্রবণতা হলো অতিরিক্ত খাওয়া, বিশেষ করে উচ্চমাত্রার প্রক্রিয়াজাত ও জাঙ্ক ফুড খাওয়া। ইউনিভার্সিটি অব টরেন্টোর একদল গবেষকের সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় জানা যায়, এই খাদ্যাভ্যাস শুধু ওজন বৃদ্ধির কারণই নয়, সাথে হরমোনজনিত ভারসাম্যহীনতার মাধ্যমে বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড হরমোনের ব্যালেন্স অস্থিতিশীল করে Infertility প্রবনতা বাড়িয়ে তোলেঃ
জাঙ্ক ফুড মূলত ট্রান্স ফ্যাট, রিফাইন্ড সুগার এবং সোডিয়ামের পরিমান বেশি থাকে। এই উপাদানগুলো লিভারে ফ্যাটি এসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যার কারনে সৃষ্টি হয় non-alcoholic fatty liver disease (NAFLD)। NAFLD আবার ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের সাথে জুক্ত, যা মেয়েদের ক্ষেত্রে Polycystic Ovary Syndrome (PCOS)-এর মূল কারণ। গবেষণা বলছে, প্রতি ১০ জন নারীর মধ্যে অন্তত ১ জন PCOS-এ আক্রান্ত হয়ে থাকে।
PCOS হলে ডিম্বাণু ঠিকমতো তৈরি হয় না বা নিষিক্ত হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিপক্বতা পায়না। ফলে সন্তান ধারণে বা বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। তাছাড়া শরীরে ইস্ট্রোজেন ও অ্যান্ড্রোজেন হরমোনের অনুপাতে ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে। Learn more…
কর্টিসোল, স্ট্রেস ও সুগার ক্রেভিং
অতিরিক্ত খাবার খাওয়া বিশেষ করে রাতে এবং অনিয়মিত খাওয়ার সময় কর্টিসোল নামক স্ট্রেস হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। কর্টিসোল একদিকে যেমন ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের দিকে ঠেলে দেয়, তেমনি বাড়িয়ে দেয় অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবনতা।
খাওয়ার অনিয়ম ও ওজন বৃদ্ধি
অনেকেই একবেলা বেশি খেয়ে সারা দিন না খেয়ে থাকেন, এবং ধারনা করেন যে এতে ওজন কমবে। কিন্তু গবেষণা বলছে, অনিয়মিত খাওয়া মেটাবোলিজম এর প্রক্রিয়া ধির করে দেয়। এতে শরীর বেশি ফ্যাট জমাতে শুরু করে। দিনের মধ্যে ছোট ছোট সুষম মিল গ্রহণ করলে শরীর তার প্রয়োজনীয় শক্তি নিয়মিত পায়, এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যায় ।
হাইড্রেশন ও ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ কমায় ওজন বৃদ্ধির ঝুকি
খাবার খাওয়ার পেছনে সবসময় ক্ষুধা দায়ি থাকেনা। অনেক সময় শরীর পানিশূন্য হলে আমাদের মস্তিষ্ক সেটা ক্ষুধা হিসেবে শরিরে ভুল ব্যাখ্যা করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, দৈনিক কমপক্ষে ২.৫ থেকে ৩ লিটার পানি খেলে এই বিভ্রান্তি কম হয়ে থাকে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
ঘুমের ঘাটতি ও খাদ্য-আসক্তি
ঘুমের সঙ্গে হরমোনের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। অপর্যাপ্ত ঘুম ghrelin নামক হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা ক্ষুধা বাড়ায়, এবং

healthy lifestyle for better Health solutions
leptin হরমোনের মাত্রা কমিয়ে দেয়।রাতজাগা বা মোবাইল-ল্যাপটপে অতিরিক্ত সময় কাটালে এই ভারসাম্য নষ্ট হয়, ফলে অতিরিক্ত খাবার ইচ্ছা বাড়ে । যার ফলে ওজন বৃদ্ধির পাশাপাশি বন্ধ্যাত্বের বা Infertility ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবনতা কমিয়ে সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে যে বিষয় গুলো মেনে চলা যায়ঃ
- প্রি-মিল প্ল্যানিং:সারাদিনে কখন কন খাবার খাবেন তা ভেবে রুটিন করে রাখা যায়।
- হেলদি স্ন্যাকস খাওয়া: যেমন বাদাম, ফল, দই, চিড়া ইত্যাদি—যা ক্ষুধার সময় দ্রুত হাতের কাছে পাওয়া যায় হাল্কা ক্ষুধা মেটাতে উপযোগী । তাছাড়া প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এমন অরগানিক সুপাফুড নিয়মিত খাওয়া।
- শরীরচর্চা ও “ডিলেড গ্র্যাটিফিকেশন”: খাবার খাওয়ার আগে অন্তত ১৫–২০ মিনিট হাঁটা বা ব্যায়াম করা এতে ডোপামিন রিলিজ হয়, এবং খাবার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে
- “মাইন্ডফুল ইটিং” অভ্যাস করুন: খাওয়ার সময় টিভি বা মোবাইলে না থেকে প্রতিটি কামড় উপভোগ করে খান। এতে আপনার পেট ভরার সংকেত বুঝতে সহজ হবে ।